
মোঃ সিরাজুল মনির চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) রাজস্ব বিভাগে জালিয়াতির মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকার হোল্ডিং ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার ঘটনায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামকে কারণ দর্শানোর দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার মেয়রের স্বাক্ষরিত এ নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, চসিকের ৪১নং ওয়ার্ডের ৫১৫/এ/৫৯৪ নং হোল্ডিং স্থিতস্থাপনার ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের বার্ষিক মূল্যায়নে ফিল্ড বুকে ঘষামাজা করে ২৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা হতে ২০ কোটি টাকা কমিয়ে ৫ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা দেখানো হয়। যা রিভিউ এসেসম্যান্ট বোর্ডের মাধ্যমে ৫৮ লাখ টাকায় চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়। অন্যদিকে, ৩৮নং ওয়ার্ডের ৩১৮/৩৩১ নং স্থিতস্থাপনার ফিল্ড বুকে ঘষামাজা করে ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা থেকে ২০ কোটি টাকা কমিয়ে ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা দেখিয়ে রিভিউ এসেসম্যান্ট বোর্ডের মাধ্যমে ২ কোটি টাকায় চ‚ড়ান্ত নিষ্পত্তি করা হয়। এসেসম্যান্টের এই ঘষামাজার অনিয়মের মাধ্যমে এসেসম্যান্ট ভ্যালু ব্যাপকহারে কমানোর কারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ব্যাপকভাবে রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হয়েছে।
নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, উক্ত অনিয়মের বিষয়টি ২০২৩ সালের ২৮ মে কর্তৃপক্ষ বরাবরে উত্থাপিত হয়। আপনি ওই সময় থেকে ২০২৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিš‘ উক্ত অভিযোগের বিষয়ে দ্রæততার সাথে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ব্যবহারকরণসহ দোষী ব্যক্তিদের সনাক্তকরণ এবং বর্ণিত হোল্ডিংসমূহের এসেসম্যান্ট রিভিউ বাতিলপূর্বক কর নির্ধারণের বিষয়ে পুনঃ রিভিউর জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। এতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হয়েছে এবং দোষী ব্যক্তিদের যথাসময়ে কোন শাস্তির আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। ফলে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৬২(২) ধারা অনুযায়ী আপনার দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, সুদীর্ঘ সময়ে আপনি উল্লিখিত বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় কর্পোরেশন বড় ধরনের রাজস্ব আয় হতে বঞ্চিত হয়েছে, যাতে স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ৬২(২) ধারা অনুযায়ী আপনার দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। আপনার এহেন দায়িত্ব অবহেলার বিষয়ে অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য তাকে নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য, চসিকের হোল্ডিং ট্যাক্স ঘষামাজা করে ৪০ কোটি টাকার রাজস্ব জালিয়াতির ঘটনায় গত ২১ অক্টোবর দুই কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং তিনজনকে বদলি করেছিল মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সেইসাথে হোল্ডিং ট্যাক্সের রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্তে প্রতারণা ও ফিল্ড বুকে ঘষামাজা করে ৪০ কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় ওই দু’টি রিভিউ বোর্ড বাতিলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল