
মোঃ সিরাজুল মনির চট্টগ্রাম ব্যুরো
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা ততই বাড়ছে। যদিও অন্তবর্তী সরকার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো মূল্যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করেছে। কিন্তু বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সাধারণ জনগণ নির্বাচন হওয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। সংবিধানের আলোকেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এটা প্রধান চাওয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি অন্যদিকে জামায়েত এনসিপি এবং অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর কয়েকটি চাই পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচন।
এখন মূলত সংখ্যা দেখা দিয়েছে কোন পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেটার ব্যবস্থাপনা নিয়ে। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নির্বাচনী রোড ম্যাপে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার কথা রয়েছে। কমিশন বলছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে গেলে বর্তমান নির্বাচনী সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে যা অল্প সময়ের মধ্যে সম্ভব নয়। কিন্তু বিএনপি ছাড়া জামায়াত ও এনসিপির দাবি সংবিধান পরিবর্তন করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।

এদিকে সাধারণ মানুষ আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় হিসাব নিয়ে আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে প্রায় সময় হাটে বাজারে চায়ের দোকানে অফিসে যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে আলোচনায় রয়েছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সুস্থ নির্বাচন হলে কে কত আসন পাবে কে সরকার গঠন করবে এগুলা হলো এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান সময়ে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি আলোচনার মধ্যমনি হলেও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও নবগঠিত এনসিপিকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে অনেকেই। কারণ আওয়ামীলীগের নিবন্ধন বাতিল হওয়াতে তাদের সমর্থিত ভোটগুলো কোথায় যেতে পারে তা হল আলোচনার বিষয়। আবার জামায়াত এবং এনসিপি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে তাতে কি ফল আসতে পারে সেটাও ভেবে দেখার বিষয়। আবার বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল যোগবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করার চিন্তা ভাবনা করে যাচ্ছে এটাও ভেবে তুলেছে রাজনীতির মহলে। তবে কোন দলের সাথে কোন দল জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে তা বুঝতে হলে আরো কিছু সময় অতিবাহিত করতে হবে সাধারণ মানুষকে। এখনই সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলন শুরু করছে ইসলামিক দলগুলো আগামী নির্বাচন যাতে পিআর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অভিমত অজনপ্রিয় কিছু দল সংসদ সদস্য হওয়ার লোভে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার দাবী জানিয়ে আসছে কিন্তু সংবিধানের বাইরে গিয়ে এ পদ্ধতিতে নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব না। দেশের ভোটাররা ভোট উৎসবে মেতে উঠার জন্য অপেক্ষায় আছে সেই উৎসবকে বাঁধা গ্রস্ত করতে কিছু রাজনৈতিক দল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে দিয়েছে। এরা হলো মূলত ফ্যাসিবাদীদের দোসর। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থার কোন বিকল্প নাই। গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনের কোন বিকল্প নাই তাই আগামী ফেব্রুয়ারিতে আয়োজিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার সরকারের যে চিন্তা-ভাবনা রয়েছে বিএনপি তাদের শতভাগ সহযোগিতা করবে এবং এ নির্বাচনে জনগণ যে রায় দিবে বিএনপি সেটা মেনে নিয়েই জনগণের পাশে থাকবে বলে বিএনপি নেতারা মতামত দেন।
অপরদিকে নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াতের প্রস্তুতি থাকলেও এনসিপির তেমন প্রস্তুতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না তারা আপাতত দল গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। তবে সময় অনুযায়ী সকল প্রকারের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হবে বলে এনসিপির নেতারা বলেন। ভিন্নমত পোষণ করে এনসিপি নেতারা বলেন এত তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন আয়োজনের কোন দরকার নেই আগে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে এবং কোন পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা বিবেচনায় আনতে হবে এবং সরকার এ বিষয়ে তাদের মতামত কে প্রাধান্য দিবে বলে তারা আশা পোষণ করেন।